Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

সয়াবিন ও সুপারির লক্ষ্মীপুর

ডাউনলোড ব্র্যান্ড বুক

সয়াবিন ও সুপারির লক্ষ্মীপুর

বিস্তারিত

জেলা ব্র্যান্ডিং- লক্ষ্মীপুর

কর্ম-পরিকল্পনা

১. ভূমিকা    

বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে রূপকল্প-২০২১ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশকে একটি সুখি ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের জন্য রূপকল্প-২০৪১ প্রণয়ন করেছে। উক্ত রূপকল্পসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন দ্রুত এবং ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাই বিভিন্নভাবে স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত ও অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময়। লক্ষ্মীপুর জেলা তার ব্যতিক্রমনয়। এ-জেলার একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় পণ্য হলো-সয়াবিন যথাযথ পরিকল্পনা ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে এই শিল্পটির আশানুরূপভাবে বিকাশ লাভ করেনি।

জেলা-ব্র্যান্ডিংয়ের আওতায় সয়াবিনকে ব্র্যান্ড করা সম্ভব হলে তা এ-শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর তথা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

 

লক্ষ্মীপুরে সয়াবিনের ইতিহাস :

সয়াবিন : লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন চাষ দিন দিন বিকশিত হচ্ছে। বর্তমানে জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৭০ ভাগ সয়াবিন এ জেলায় উৎপাদিত হচ্ছে। সর্বপ্রথম একসাথে ১৯৮২ সালে এ জেলার রামগতি উপজেলায় মাত্র ১ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সয়াবিনের চাষ করা হয়। এরপর ১৯৯২ সালে এমসিসি ও ডর্প নামক দুটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সয়াবিন চাষে কৃষকদেরকে ব্যাপক উদ্বুদ্ধ করে। তখন থেকেই ধীরে ধীরে অন্য রবি ফসলের সাথে সয়াবিনের আবাদ বৃদ্ধি পেতে থাকে। উৎপাদন খরচ কম, ভালো দাম ও ফলন পাওয়ায় বর্তমানে জেলার চাষীরা অন্য রবি শস্যের পরিবর্তে দিন দিন সয়াবিন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এভাবে প্রতিবছর ক্রমন্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বিগত রবি মৌসুমে (২০১৫-১৬) এজেলায় ৫২,৭২০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয় এবং প্রায় ১ লক্ষ মেঃ টনের বেশি সয়াবিন উৎপন্ন হয় যার বাজার মূল্য তিনশত কোটি টাকার বেশি।

          এক সময় লক্ষ্মীপুর জেলার চরাঞ্চলে প্রচুর খেসারী, মরিচ, বাদাম, তিল, তিশি, মিষ্টি আলু, কাউন, খিরা, তরমুজ, বাঙ্গি, অড়হর, মুগ ও অন্যান্য ডালসহ বিভিন্ন রবিশস্যের চাষ করা হলেও এখন সয়াবিনের কারণে এ সকল ফসলের আবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তার পরিবর্তে এখন মাঠ জুড়ে শুধু সয়াবিন ছাড়া অন্য ফসল তেমন চোখে পড়ে না। রবি মৌসুমে মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সময়ে সয়াবিন বপন করে ৯০ থেকে ১১০ দিন সময় পর সংগ্রহ করা হয়। অন্যান্য রবি ফসলের চেয়ে সয়াবিন চাষ অনেক বেশি লাভজনক। তাছাড়া এখানে রায়পুর উপজেলায় হায়দরগঞ্জ বাজারে সয়াবিনের একটি পাইকারী বাজার আছে।

২.১ সয়াবিনের বিবরণ :

এখন কৃষকগণ সয়াবিন নিজেরাই সংরক্ষণ করতে সক্ষম। শরৎকালে এ জেলায় ৫০০ হেঃ জমিতে প্রায় ১০০০ মেঃ টন সয়াবিন উৎপাদত হয়। যার সম্পূর্ণটাই বীজ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সয়াবিন একটি পরিবেশ বান্ধব ফসল। সয়াবিনে সারের পরিমান কম লাগে। সীম গোত্রের ফসল হওয়ায় সয়াবিনের শিকড়ে নডিউল তৈরী হয়, যা হতে হেক্টর প্রতি প্রায় ২৫০ কেজি নাইট্রোজেন (ইউরিয়া সার) সংবন্ধন হয়। এ নাইট্রোজেন সার গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং একটি অংশ মাটিতে যুক্ত হয়ে পরবর্তী ফসলে অবদান রাখে। হেক্টরে সর্বোচ্চ উৎপাদন খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা। ভাল ফসল ও দাম পাওয়া গেলে উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় ৪ গুণ বেশি লাভ হয়। যা অন্য কোনো ফসল আবাদ করে পাওয়া যায় না। তাছাড়া সার, কীটনাশক ও পরিচর্যায় খরচ হয় তুলনামূলক কম।

          সয়াবিন তৈলবীজ হলেও আমাদের দেশের উৎপাদিত সয়াবিন থেকে তৈল উৎপাদন করা হয় না। এ দেশের সয়াবিন মূলত পোলট্টি খাদ্য, মাছের খাদ্য তৈরি, সয়ানাগেট, সয়াবিস্কুট, সয়ামিট, সাবান, সয়াদুধ, শিশুখাদ্যসহ নানা রকমের ৬১ টি পুষ্টিকর খাবার ও পথ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

 

২.২ সয়াবিনে পুষ্টি গুনাবলী :

পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে খাদ্য হিসেবে সয়াবিনের ব্যাপক ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এতে শতকরা ৪০ ভাগের অধিক আমিষ এবং ২০-২২ ভাগ তেল রয়েছে। এছাড়া সয়াবিন শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন এ, বি ও সি’র উন্নত উৎস হিসেবে কাজ করে। সয়াবিন শুধু কোলেস্টেরলমুক্তই নয়, বরং রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানোর মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। মানুষের সু-স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধে সয়াবিনজাত প্রোটিনের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এ কারণে স্তন ক্যান্সার, অন্ত্রের ক্যান্সার ও প্রন্থির ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে সয়াবিন। সয়াবিন পেশি গঠন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া সয়াবিন হজম বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলস রোগ নিরাময় করে। মেয়েদের মাসিককালীন প্রদাহ, আকস্মিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অস্বাভাবিকতা নিয়ন্ত্রণ করে।

 

৩. জেলা-ব্র্যান্ডিংয়ের উদ্দেশ্য

সয়াবিনের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর জেলা-ব্র্যান্ডিংয়ের মূল উদ্দেশ্য গুলো হলো:

  • জেলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গতি সঞ্চার;
  • জেলার অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি;
  • জেলার ইতিবাচক ভাবমুর্তি বিনির্মাণ;
  • সয়াবিনের পটভূমিতে লক্ষ্মীপুর জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির লালন ও বিকাশ;
  • জেলার সর্বস্তরের মানুষকে উন্নয়নের অভিযাত্রায় সম্পৃক্ত করা;
  • দেশ-বিদেশে এই সয়াবিন পণ্যের বাজার সৃষ্টি ও প্রসার;
  • দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণ;
  • সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা।

৪. সয়াবিন ব্র্যান্ডিংয়ের বিষয় হিসেবে নির্বাচনের যৌক্তিকতা :

এ অঞ্চলের কৃষকদের প্রত্যাশা লক্ষ্মীপুর জেলার সয়াবিনকে শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হবে। যেখানে উৎপাদিত হবে সয়াবিন তেল, সয়াখাদ্য ও সয়াপ্রোটিন। এতে এ অঞ্চলের কৃষকের উৎপাদিত সয়াবিন ন্যায্যমূল্যে সহজে বাজারজাতকরণ যেমনি নিশ্চিত হবে, তেমনি সুযোগ তৈরি হবে হাজার হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান এবং কৃষক ন্যায্যমূল্য পেয়ে সয়াবিন চাষে আরো বেশি আগ্রহী হবে। আর এভাবেই সয়াবিনকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে উন্মোচিত হবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দ্বার।

          এসব দিক বিবেচনা করে আমাদের আমিষের ঘাটতি পূরণ, তৈল আমদানী হ্রাস করা, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা (জৈব নাইট্রোজেন সংবদ্ধন) এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সয়াবিনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই লক্ষ্মীপুর জেলার ব্রান্ডিং নাম “সয়াবিনের লক্ষ্মীপুর” (Soya Land) নামকরণ অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত।

 

৫. লোগো ও ট্যাগলাইন

সয়াবিনের  একটি চমৎকার পুষ্টির অংশ বিশেষকে জেলা-ব্র্যান্ডিংয়ের লোগো হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।

ট্যাগ-লাইনটি নিম্নরূপ:

সয়াবিনের লক্ষ্মীপুর

Soya Land

এ ট্যাগ-লাইনটির মর্মার্থ হলো- এই সয়াবিনের মাধ্যমে শুধু লক্ষ্মীপুরই নয় পুরো বাংলাদেশ পরিচিতি লাভ করবে এবং তা লক্ষ্মীপুরসহ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

 

৬. লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন শিল্পের বর্তমান অবস্থা :

 বর্তমানে জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৭০ ভাগ সয়াবিন এ জেলায় উৎপাদিত হচ্ছে। সর্বপ্রথম একসাথে ১৯৮২ সালে এ জেলার রামগতি উপজেলায় মাত্র ১ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সয়াবিনের চাষ করা হয়। এভাবে প্রতিবছর ক্রমন্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বিগত রবি মৌসুমে (২০১৫-১৬) এজেলায় ৫২,৭২০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয় এবং প্রায় ১ লক্ষ মেঃ টনের বেশি সয়াবিন উৎপন্ন হয় যার বাজার মূল্য তিনশত কোটি টাকার বেশি।

          এক সময় লক্ষ্মীপুর জেলার চরাঞ্চলে প্রচুর খেসারী, মরিচ, বাদাম, তিল, তিশি, মিষ্টি আলু, কাউন, খিরা, তরমুজ, বাঙ্গি, অড়হর, মুগ ও অন্যান্য ডালসহ বিভিন্ন রবিশস্যের চাষ করা হলেও এখন সয়াবিনের কারণে এ সকল ফসলের আবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তার পরিবর্তে এখন মাঠ জুড়ে শুধু সয়াবিন ছাড়া অন্য ফসল তেমন চোখে পড়ে না। রবি মৌসুমে মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সময়ে সয়াবিন বপন করে ৯০ থেকে ১১০ দিন সময় পর সংগ্রহ করা হয়। অন্যান্য রবি ফসলের চেয়ে সয়াবিন চাষ অনেক বেশি লাভজনক।

 

. কাঙ্ক্ষিত ফলাফল :

সয়াবিনেক ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে নিম্নোক্ত ফলাফলসমূহ অর্জনের লক্ষ্যে সার্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে

  • সয়াবিনের বাৎসরিক উৎপাদন: ৪০ % বৃদ্ধি করা
  • সয়াবিনের বাৎসরিক বিক্রয়: ৫০ % বৃদ্ধি করা
  • কর্মস্ংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি: ২৫০০০ জন
  • আর্থিক মূল্যে বিক্রয় বৃদ্ধি: ৩০,০০,০০০ টাকা
  • স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান: ৪০%
  •  

8. সয়াবিন শিল্পের সবলদিক, দুর্বলতা, সুযোগ ও ঝুঁকি বিশ্লেষণ :

        সার্বিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সুবিধার্থে প্রাথমিকভাবে নিম্নোক্ত সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

সবল দিক 

  • প্রাচুর্য  ও কৃষকদের আগ্রহ : লক্ষ্মীপুর মেঘনার তীরবর্তী হওয়ায় এখানকার কৃষিজমি উর্বর। যারফলে সয়াবিন অন্যান্য ফসলের তুলনায় অধি উৎপাদিত হয়। অধিক উৎপাদন ও স্বল্প খরচের জন্য সয়াবিন চাষে কৃষকদের অধিক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়।
  • শ্রমিকের সহজ প্রাপ্যতাঃ  অনেক কৃষক সয়াবিন চাষ-কে প্রধান পেশা হিসেবে নিয়েছে। এছাড়া এ কাজে প্রচুর শ্রমিক স্বল্প মুজরিতে পাওয়া যায় বিধায় কৃষকরা এ ফসল উৎপাদনে বেশি আগ্রহী। অন্যদিকে সয়াবিনের চাষ বেশি হওয়ায় শ্রমিকরাও এখাতে বেশি নিয়োজিত থাকে।
  • অনুকূল ভূ-প্রকৃতিঃ মেঘনার তীরবর্তী হওয়ায় এ অঞ্চলে ভূ-প্রকৃতি সয়াবিন চাষে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। উর্বর মাটি, সহজলভ্য সেচ ব্যবস্থা থাকায় লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন চাষ আশানুরূপ বেশি উৎপাদিত হয়।

দুর্বলতা :

  • কৃষিভিত্তিক শিল্পের অভাবঃ লক্ষ্মীপুরে সয়াবিনের চাষ এবং উৎপাদন অধিক পরিমাণে হওয়ার পরও এ অঞ্চলে সয়াবিন-কে ঘিরে কৃষিভিত্তিক কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। ফলে কৃষকদের উৎপাদিত সয়াবিন জাতীয় অর্থনীতিতে আশানুরুপ অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে না।
  • কাঁচামালের গুনগতমান নিয়ন্ত্রণের অভাবঃ লক্ষ্মীপুরে কার্যত প্রথাগত ও স্থানীয় পদ্ধতিতে সয়াবিন উৎপাদিত হয়। ফলে সয়াখাদ্যের জন্য  প্রয়োজনীয় কাঁচামালে গুনগতমান বজায় রাখা প্রায়শয় সম্ভব হয় না।
  • পুঁজি বিনিয়োগে আগ্রহের অভাবঃ সয়াবিন-কে ঘিরে কৃষি শিল্প এবং বাণিজ্যিকভাবে সয়াবিন তৈল উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগের প্রয়োজন। কিন্তু লক্ষ্মীপুর অর্থনৈতিক বাস্তবাতায় পুঁজি বিনিয়োগে আগ্রহের অভাব পরিলক্ষিত হয়।
  • পৃষ্ঠপোষকেতার অভাবঃ লক্ষ্মীপুর একটি উপকূলীয় ও প্রান্তিক জেলা হওয়ায় এখানকার অর্থনৈতিক অবকাঠামো দুর্বল। এমতাবস্থায় সরকারী ও বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়।
  • পরিবহন সমস্যাঃ লক্ষ্মীপুর জেলাটি মেঘনার তীরবর্তী জেলা হিসেবে অবস্থিত । এ জেলা প্রাকৃতিক দুর্যোগ পূর্ণ এলাকা হওয়ায় অধিকাংশ রাস্তাঘাট জরার্জীন । যার ফলে মালামাল পরিবহন অত্যন্ত কষ্ঠ সাধ্য।

সম্ভাবনা :

  • কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ  সয়াবিন শিল্পের উন্নয়নের সাথে লক্ষ্মীপুর সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী করা সম্ভব। এর ফলে কৃষকেরা সয়াবিন বিক্রির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও যথেষ্ট পরিমাণ অবদান রাখছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন বাজারজাতকারণ, সরবরাহকারী ইত্যাদি ক্ষেত্রে গ্রামের আরও অনেকে শ্রমিকের  কাজের সুযোগ  সৃষ্টি হচ্ছে। এতে লক্ষ্মীপুর এর হতে দারিদ্র্যতা দূর হচ্ছে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সাথে সাথে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে।
  • বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনাঃ বিদেশিরা আমাদের এই কৃষি-কে মূল্যায়ন করে এবং লালন করছে। বাংলাদেশের সয়াবিন উন্নত গুনগতমান ও মূল্য তুলনামূল হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সয়াবিন এর বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যেও সয়াবিন এই চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে বিদেশে সয়াবিনের বাজার প্রসার করে সয়াবিনকে আরও গ্রহণযোগ্য কররে তোলা হবে।
  • দেশীয় বাজার সৃষ্টিঃ  লক্ষ্মীপুরের সয়াবিনের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলাতে সয়াবিন বিক্রয় কেন্দ্র থাকলে সয়াবিনর বিপণনে সহায়ক হবে। সয়াবিন জাতীয় সব ধরণের ফসল বিক্রয় ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা গেলে সারা বছরেই সয়াবিন বিক্রয় সম্ভব।
  • সম্পূরক শিল্পের বিকাশ : সয়াবিন-কে ঘিরে শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠিত হলে পাশাপাশি সম্পূরক শিল্পের বিকাশ ঘটবে। এতে কৃষক ছাড়াও স্থানীয় বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
  • খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মিটানো :  পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে খাদ্য হিসেবে সয়াবিনের ব্যাপক ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এতে শতকরা ৪০ ভাগের অধিক আমিষ এবং ২০-২২ ভাগ তেল রয়েছে। এছাড়া সয়াবিন শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন এ, বি ও সি’র উন্নত উৎস হিসেবে কাজ করে। সয়াবিন শুধু কোলেস্টেরলমুক্তই নয়, বরং রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানোর মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। মানুষের সু-স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধে সয়াবিনজাত প্রোটিনের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে।

ঝুঁকি: 

  • নদী ভাঙ্গন ও প্রাকৃতিক দূর্যোগঃ লক্ষ্মীপুর জেলাটি মেঘনার র্তীরে অবস্থিত। মেঘনার প্রবল ভাঙ্গনের ফলে  এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ জায়গা জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে। ফলে তার আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় সায়াবিন চাষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • বিকল্প পণ্যের সহজলভ্যতা : সয়াবিন থেকে তৈরিকৃত খাবারও পুষ্টিকর পণ্য বাজারজাতকরণে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন কোম্পানীর প্যাকেটজাত খাবার । এছাড়া সয়াবিন তেলের বিকল্প হিসেবে পামওয়েল বাজারে সহজলব্যও মূল্য কম থাকায় উদ্যোক্তরা স্থানীয়ভাবে সয়াবিল তেল উৎপাদনে কম আগ্রহী।

 

৯. জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিও মুল্যবোধকে ব্র্যান্ডিং এর সম্পৃক্তকরণ : 

    সয়াবিন লক্ষ্মীপুর এর একটি অন্যতম নিদর্শন। এর মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে লক্ষ্মীপুর বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, উপকথা ইত্যাদিকে ফুটিয়ে তুলার উদ্যোগ ইতোমধ্যে গৃহীত হয়েছে এবং তা     অব্যাহত থাকবে।

 

১০. জেলা-ব্র্যান্ডিংবাস্তবায়নকর্ম-পরিকল্পনা

        জেলা ব্র্যান্ডিং বাস্তবায়নের জন্য তিন বছর মেয়াদী নিন্মোক্ত কর্ম-পরিকল্পনা অনুসরণ করা হবে:

  • স্বল্পময়াদ: ০৬মাস
  • মধ্যময়াদ: ০১বছর ০৬মাস
  • দীর্ঘমেয়াদ: ৩বছর

 

জেলা ব্র্যান্ডিং এর কর্মপরিকল্পনা

লক্ষ্মীপুর জেলা ব্রান্ডিং এর বই ডাউনলোড করতে নিম্নোক্ত লিংকে ক্লিক করুন

https://drive.google.com/file/d/1WSVA_3qJJTmxmzybCrieeKOwALVKrV4x/view?usp=sharing