Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

নদ-নদী

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ০৪/০৯/২০২৪ খ্রি. তারিখের কার্যবিবরণীর ০১, ০২, ০৩ এবং ০৪ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক লক্ষ্মীপুর জেলায় নিম্নলিখিত কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। 

আলোচ্য বিষয়

সিদ্ধান্ত

গৃহীত পদক্ষেপ/কর্মপরিকল্পনা

০১. ০২ (দুই) মাসের মধ্যে নদ-নদীর তালিকা চূড়ান্তকরণ

আগামী ০২ (দুই) মাসের মধ্যে নদীর সংখ্যা চূড়ান্তকরণ এবং নদ-নদীর প্রকৃত তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ।

বিগত ১৫ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার কার্যবিবরণীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক লক্ষ্মীপুর জেলার অন্তর্গত নদ-নদীগুলো হচ্ছে-  ১. মেঘনা (লোয়ার), ২. ডাকাতিয়া, ৩. ভুলুয়া, ৪. মরা ডাকাতিয়া এবং ৫. রহমতখালী। চূড়ান্তকৃত নদ-নদীর তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার জন্য প্রোগ্রামারকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

০২. নদীর দূষণ ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ কর্মপরিকল্পনা ও নদী দূষণমুক্ত করার কর্মপরিকল্পনা আগামী ০২ (দুই) মাসের মধ্যে প্রণয়ন এবং সকল নদীর জন্য ‘হেলথ কার্ড’ প্রস্তুতকরণ।

নদ-নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে সাশ্রয়ী বাজেটসহ সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। পরবর্তীতে সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত করতে হবে এবং সকল নদীর জন্য ‘হেলথ কার্ড’ প্রস্তুত করতে হবে।

ক) এ লক্ষ্যে ০৩ (তিন) টি ধাপে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে- স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।

১) স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ জেলার ভুলুয়া, ডাকাতিয়া এবং রহমতখালী নদী হতে অস্থায়ী বাঁধ, কচুরিপানা, জাল, বেড়া, বাজারের বর্জ্য ইত্যাদি দ্রুত অপসারণ করা হয়েছে।

(২) মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নদী খনন এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা।

  -এ লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুর জেলায় সদর-রামগতি-কমলনগর উপজেলার অন্তর্গত ভুলুয়া নদী পুনঃখননের উদ্দেশ্যে ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, লক্ষ্মীপুর কর্তৃক  প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।

   এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার অন্তর্গত রহমতখালী নদীর চন্দ্রগঞ্জ থেকে চরমেঘা পর্যন্ত ১৮ (আঠারো) কি.মি. পুনঃখননের উদ্দেশ্যে ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, লক্ষ্মীপুর কর্তৃক  প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।

 (৩) দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ জেলার ভুলুয়া নদীতে স্থাপিত কম প্রশস্ততাবিশিষ্ট ও কম উচ্চতাসম্পন্ন ব্রীজসমূহের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

খ)  লক্ষ্মীপুর জেলার নদীর হেলথ কার্ড প্রস্তুত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়।

০৩. জেলাভিত্তিক নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণ কর্মপরিকল্পনা

আগামী ০২ (দুই) মাসের মধ্যে লক্ষ্মীপুর জেলার  রায়পুর উপজেলার ডাকাতিয়া নদীকে দূষণ ও অবৈধ দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে রায়পুর-হায়দারগঞ্জ রাস্তায় ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিত বাঁধ/রাস্তার উপর নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদপূর্বক বাঁধ/রাস্তা অপসারণসহ রাস্তাটি জনগণের চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সেখানে দ্রুততার সাথে ব্রীজ নির্মাণ করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য বাজেট ও লজিস্টিকসহ তালিকা প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় ডাকাতিয়া নদীর রায়পুর-হায়দারগঞ্জ রাস্তায় ডাকাতিয়া নদীর উপর ৫৭ টি স্থাপনা রয়েছে। এই স্থাপনা উচ্ছেদ, বাঁধ/রাস্তা অপসারণ, নদী খনন সংক্রান্ত ও অন্যান্য বিষয়ে সম্ভাব্য মোট বাজেটের পরিমাণ ২৯,১৭,৫৫৭/- (উনত্রিশ লক্ষ সতেরো হাজার পাঁচশত সাতান্ন) টাকা এবং ৫০-৬০ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট ০১ (এক)টি ব্রীজ নির্মাণ করতে সম্ভাব্য বাজেটের পরিমাণ ৯,০০,০০,০০০/- (নয় কোটি) টাকা। অর্থাৎ সম্ভাব্য মোট বাজেটের পরিমাণ ৯,২৯,১৭,৫৫৭/- (নয় কোটি উনত্রিশ লক্ষ সতেরো হাজার পাঁচশত সাতান্ন) টাকা। সম্ভাব্য সময় প্রয়োজন ০৪ (চার) মাস। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাপোর্টসমূহ হচ্ছে- ম্যাজিস্ট্রেট, সার্ভেয়ার, নিরাপত্তা বাহিনী, শ্রমিক, ভেকু মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি।

০৪. অংশীজন সম্পৃক্তকরণ

নদী দূষণ ও অবৈধ দখলমুক্ত করার বর্ণিত কার্যক্রম টেকসই, দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ ও অভিযান পরিচালনার সময় এবং ভবিষ্যতে নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি এলাকাবাসী, তরুণ প্রজন্ম, সামাজিক সংগঠন ও এনজিওকে সম্পৃক্তকরণসহ পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব নেয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


নদী খনন ও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সময় এবং ভবিষ্যতে নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি এলাকাবাসী, তরুণ প্রজন্ম, সামাজিক সংগঠন ও এনজিওকে সম্পৃক্তকরণ করা হবে।

      


মেঘনা - ডাকাতিয়া, কাটাখালি, রহমতখালী, ভুলুয়া ও জরিরদোনা লক্ষ্মীপুর জেলার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নদী। প্রশস্ততম মেঘনা নদী লক্ষ্মীপুর জেলাকে বৃহত্তর বরিশাল জেলা থেকে পৃথক করেছে। জেলায় মোট ১১৮ বর্গকি. মি. নদীপথ রয়েছে। নদীপথ জেলার মোট আয়তন ২৩%। 

 

ডাকাতিয়া: আন্ত: সীমান্ত এই নদী উৎস পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে। নদীটি উজানে ফেনী নদী দ্বারা বিভক্ত এবং এটির প্রধান স্রোত চেৌদ্দগ্রাম খাল দিয়ে আবার ফেনী নদীর সাথে যুক্ত হয়েছে। দক্ষিণে এর শাখা নোয়াখালী খাল গঠন করেছে এবং পশ্চিমে শেখেরহাটের কাছ থেকে দক্ষিণে রায়পুরের কাছে মেঘনায় মিলেছে। এই স্থানেই ডাকাতিয়ার নতুন ও তীব্র স্রোতধারা চাঁদপুর খাল দিয়ে মেঘনায় পড়েছে। 

 

মেঘনা : লক্ষ্মীপুর জেলার পশ্চিমাঞ্চল মেঘনা নদী বিধৌত। চাঁদপুর জেঁলার দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার উত্তর-পশ্চিম কোন দিয়ে রায়পুর উপজেলায় এই নদী লক্ষ্মীপুরে প্রবেশ করেছে। প্রতি বছর বর্ষায় মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবন সৃষ্টি করে। মেঘনা নদী লক্ষ্মীপুর জেলার পাঁচটি উপজেলার চারটিই এই নদী বিধৌত। কাটাখালি, রহমতখালী ও ভুলুয়া নদী পশ্চিমে মেঘনায় মিশেছে।